ইউক্রেনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির প্রশাসনের পরিবর্তে একটি নির্বাচনকালীন অস্থায়ী প্রশাসনকে দেশ শাসন ও নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্ব দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
এই সরকারের আওতায় নতুন নির্বাচন এবং এই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ অবসানের জন্য প্রয়োজনীয় সনদ ও চুক্তি সাক্ষর সম্ভব হবে বলে তিনি মত দেন।
এমন সময় পুতিন এই মন্তব্য করলেন যখন যুক্তরাষ্ট্র দুই দেশের এই সংঘাত নিরসনে রাশিয়ার সঙ্গে আবারও সম্পর্ক স্থাপন ও মস্কো-কিয়েভের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছে।
এর আগে পুতিন বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার সদিচ্ছা রয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরেই পুতিন দাবি করে আসছেন, ইউক্রেনের বর্তমান প্রশাসনের বৈধতা নেই এবং তিনি তাদের সঙ্গে আলোচনা বা দরকষাকষি করতে আগ্রহী নন। উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের মে মাসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মেয়াদ ফুরিয়ে গেলেও যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির কারণে তিনি এখনো দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
রাশিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় বন্দর মুরমানস্কে নাবিকদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে পুতিন বলেন, 'নীতিগতভাবে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ও আমাদের অংশীদারদের তত্ত্বাবধানে ইউক্রেনে একটি অস্থায়ী প্রশাসন চালু করা সম্ভব।'
'এর উদ্দেশ্য হবে একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচনের আয়োজন এবং এমন একটি সরকারকে ক্ষমতায় আনা, যাদের প্রতি মানুষের ভরসা আছে এবং যাদের সঙ্গে শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু হতে পারে', যোগ করেন পুতিন।
পুতিন জানান, রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি আলোচনা শুরু করে ট্রাম্প এটাই প্রমাণ করেছেন যে তিনি শান্তি চান।
উল্লেখ্য, ট্রাম্পের পুর্বসূরী বাইডেন রাশিয়ার সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ রেখেছিলেন।
'আমার মতে, যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট প্রকৃত অর্থেই এই সংঘাতের অবসান চান এবং এর পেছনে বেশ কয়েকটি কারণও রয়েছে', যোগ করেন পুতিন।
পুতিনের অস্থায়ী প্রশাসনের প্রস্তাব নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র জানান, ইউক্রেনের শাসনব্যবস্থার বিষয়গুলো দেশটির জনগণ ও সংবিধানের মাধ্যমে পরিচালিত হয়।
এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ইউক্রেন কোনো মন্তব্য করেনি।
তিনি অবৈধভাবে প্রেসিডেন্টের পদ ধরে রেখেছেন—এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন ইউক্রেনের নেতা জেলেনস্কি। তিনি বারবার বলে এসেছেন, ইউক্রেনের আইন অনুযায়ী, সামরিক আইন চালু থাকাকালীন নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়। পাশাপাশি, যুদ্ধের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন সম্ভবও নয়।